Home LATEST NEWS bangla সর্বশেষ সংবাদ যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান সংঘাতের দিকে হাঁটছে?

যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান সংঘাতের দিকে হাঁটছে?

1
0

Source : BBC NEWS

সংঘাতের পথে হাঁটছে যুক্তরাষ্ট্র-ইরান?

ছবির উৎস, Getty Images

২ ঘন্টা আগে

ইরান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, এই দুই দেশের মাঝে বৈরিতার ইতিহাস আজ নতুন না। ১৯৫০-এর দশক থেকেই এই দুই দেশের সম্পর্ক জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে।

কিন্তু সম্প্রতি এক ড্রোন হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের তিনজন সেনা নিহত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ইরান সমর্থিত কট্টর জঙ্গি গোষ্ঠী এ হামলা চালিয়েছে।

এখন এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইরানকে পাল্টা ‘জবাব’ দেয়ার কথা বলেছেন।

এতে করে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে, যুক্তরাষ্ট্র এবার সরাসরি ইরানে আক্রমণ করবে কিনা। তবে ইরানের ওপর কোনও আক্রমণ করা হলে ইরানও ইতোমধ্যে পাল্টা আক্রমণের হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

যদিও এই হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান, এই দুই দেশই জানিয়েছে যে তারা ‘যুদ্ধ’ চায় না।

কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যে টানা হামলা ও ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মাঝে মার্কিন সেনা নিহত হওয়ার ঘটনায় দেশ দু’টি ‘সংঘাতের দিকে হাঁটছে’ বলে মনে করছেন পশ্চিমা দেশগুলোর বিশ্লেষকরা।

আরও পড়ুন:
গুগল ম্যাপে টাওয়ার ২২ এর চিত্র

যে ঘটনায় সাম্প্রতিক উত্তেজনার শুরু

গত রোববার, অর্থাৎ ২৮শে জানুয়ারি সিরিয়ার সীমান্তবর্তী জর্ডানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রুকবানে এক মার্কিন ঘাঁটিতে একটি মনুষ্যবিহীন ড্রোন হামলা চালানো হয়।

পরবর্তীতে, মার্কিন কর্মকর্তারা ড্রোন হামলার শিকার হওয়া এই ঘাঁটির নাম দেন ‘টাওয়ার ২২’।

এই হামলায় তিন মার্কিন সেনা নিহত হওয়ার পাশাপাশি অন্তত ৩৪ জন সৈন্য মস্তিকে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন বলে জানায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড।

এই হামলার পেছনে কারা জড়িত সেটি স্পষ্ট না হলেও শুরু থেকেই সেন্ট্রাল কমান্ড ও বাইডেন ইরানকে দায়ী করছে। তবে ইরান যুক্তরাষ্ট্রের এমন সন্দেহকে নাকচ করে দিয়েছে।

মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, ড্রোনটি আগে একটি বাসস্থানে পড়ার পর ঘাঁটিতে এসে পড়ে। এটি যদি সরাসরি আঘাত করতো, তাহলে হতাহতের সংখ্যা আরও বেশি হতো।

বিবিসির যুক্তরাষ্ট্রের অংশীজন সিবিএস নিউজ যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানিয়েছে যে, ‘টাওয়ার ২২’ ঘাঁটিতে হামলায় যে ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে, তা ইরানে নির্মিত বলে মনে হচ্ছে।

ওই কর্মকর্তা ইঙ্গিত করেছেন যে এটা ‘শাহেদ ড্রোনের ধরন’, যা মূলত একমুখী হামলার ড্রোন। এই ড্রোন ইরান রাশিয়াকে দিয়েছে।

এদিকে, জর্ডান দাবি করছে যে ড্রোন হামলাটি সিরিয়ায় হয়েছে, জর্ডানের ভেতর নয়। এই অঞ্চলে মার্কিন ঘাঁটিতে এর আগেও হামলা হয়েছে, তবে এর আগে কখনও মার্কিন সেনাদের হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

গত সাতই অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর ওই অঞ্চলে এই প্রথম কোনও মার্কিন সেনা নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

ফ্লোরিডায় যাওয়ার আগে হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে

ছবির উৎস, Getty Images

বাইডেনের ‘জবাব’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, এই হামলায় তিন মার্কিন সেনা নিহত হওয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে জবাব দেবে, সে বিষয়ে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

গতকাল, অর্থাৎ ৩০শে জানুয়ারি হোয়াইট হাউজে বিস্তারিত না বললেও তিনি এতটুকু বলেন, “আমি মনে করি না, মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের ব্যাপক পরিসরে যুদ্ধ করার প্রয়োজন আছে।”

ইরান-সমর্থিত এক মিলিশিয়া গ্রুপ মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে এই হামলার দায় স্বীকার করলেও এই ঘটনায় ইরানকে দায়ী করা যায় কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এই অর্থে আমি তাদের (ইরান) দায়ী মনে করি যে, যারা এসব করেছে, তাদের তারা অস্ত্র সরবরাহ করছে।”

মঙ্গলবার সকালে সাংবাদিকরা তার কাছে জানতে চায় যে এই হামলার জবাব দেয়ার ব্যাপারে তিনি কোনও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কিনা। উত্তরে তিনি সম্মতিসূচক জবাব দেন, “হ্যাঁ।”

এর আগে টাওয়ার ২২-এ হামলার এই ঘটনায় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।

তখন তিনি বলেছিলেন, “এ হামলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনতে উপযুক্ত সময়ে এবং উপায়ে যুক্তরাষ্ট্র ব্যবস্থা নেবে…সবকিছুর জন্য যারা দায়ী তাদের জবাবদিহি করতে হবে এবং তা আমাদের ঠিক করা উপায়েই করতে হবে।”

তবে কীভাবে যুক্তরাষ্ট্র এর জবাব দিবে, সে বিষয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেন কিছুই জানাননি এখনও।

এর আগে পেন্টাগনের মুখপাত্র সাবরিনা সিং জানিয়েছিলেন, “আমরা যুদ্ধ চাই না, কিন্তু আমরা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো এবং আমাদের বাহিনীর উপর হামলার উত্তর দেবো।”

সূত্র: ইনস্টিটিউট ফর দ্যা স্টাডি অব ওয়ার, ২০২৪ সালের ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ডাটা।

ইরানের পাল্টা হুঁশিয়ারি

যুক্তরাষ্ট্র ‘টাওয়ার ২২’-এ হামলার জন্য ইরান সমর্থিত গ্রুপগুলোকে দায়ী করলেও শুরু থেকেই এ হামলায় সন্দেহভাজন গোষ্ঠীগুলোর সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইরান।

তবে এরপরও যদি যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর আক্রমণ করে, তাহলে তেহরানও মধ্যপ্রাচ্যে থাকা মার্কিন সম্পত্তির ওপর হামলা চালাবে; মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রকে এমন এক হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান।

যুক্তরাজ্যের দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকার ৩০শে জানুয়ারির এক প্রতিবেদনে একথা বলা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে যে ইরান সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে আছে এবং নজর রাখছে যে জর্ডানে মার্কিন সেনা নিহত হওয়ার ঘটনায় প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রতিক্রিয়া কী হয়।

বুধবার দুপুরে, অর্থাৎ ৩১শে জানুয়ারি ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত নিউজ নেটওয়ার্ক প্রেস টিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘জাতিসংঘে ইরানের স্থায়ী মিশন যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ার করে বলেছে যে ইরান ও তার জনগণের বিরুদ্ধে যে কোনও আগ্রাসনের কঠোর জবাব দেয়া হবে।’

এছাড়া, হামলার ঘটনার পর দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানানি ইরানের বার্তা সংস্থা ইরনাকে বলেছিলেন, “এ অঞ্চলের বাস্তবতাকে আমলে না নিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ইরানের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙ্গুল তোলা হচ্ছে।”

জর্ডানে ড্রোন হামলায় নিহত তিন সেনা সার্জেন্ট উইলিয়াম জেরোমি রিভার্স, স্পেশালিস্ট কেনেডি লেডন স্যান্ডারস ও স্পেশালিস্ট ব্রিয়োন্না অ্যালেক্সোনদ্রিয়া মোফেট

ছবির উৎস, US DEPARTMENT OF DEFENSE

সংঘাতের পথে হাঁটছে দুই দেশ?

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এর প্রতিক্রিয়ায় ইরান সমর্থিত বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলায় চালিয়ে আসছে। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর ঘাঁটি লক্ষ্য করে বিমান হামলার মতো পদক্ষেপ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা।

সবশেষ জর্ডানে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় তিন সেনাসদস্য নিহত হওয়ার পর পরিস্থিতি আরও কঠোর আকার ধারণ করেছে। দুই দেশই পরস্পরকে দোষারোপ ও হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছে।

যদিও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইরানের বিরুদ্ধে কোনো বড় আকারের যুদ্ধের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন তবু এই পরিস্থিতি এখানেই থামছে বলে মনে করেন না বিশ্লেষকরা।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক আন্ডার সেক্রেটারি থমাস শ্যানন এনবিসি নিউজকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন ধীরে ধীরে ইরানের সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ, বারাক ওবামা ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধীনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করা মি. শ্যানন মনে করেন, ইরান তার সমর্থিত মিলিশিয়া বাহিনী ব্যবহার করে পশ্চিমা স্বার্থকে চ্যালেঞ্জ করতে সক্ষম হয়েছে।

যদিও ইরান প্রায়ই বলে, এই গোষ্ঠীগুলোর সিদ্ধান্ত গ্রহণের ওপর তাদের কোনও প্রভাব নেই। এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞরাও স্পষ্ট নন। তবে এই অস্পষ্টতাকেই বড় করে দেখছেন মি. শ্যানন। বলছেন, এটি হিসাবের গড়মিল ও উত্তেজনার তীব্রতা বাড়িয়ে তোলার ঝুঁকি তৈরি করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব স্টেট অ্যান্টনি ব্লিংকেন মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতিকে ‘অবিশ্বাস্যভাবে অস্থির’ হিসেবে মন্তব্য করেছেন। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “অন্তত ১৯৭৩ সালের পর থেকে মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে এত বিপজ্জনক পরিস্থিতি বিশ্ব দেখেনি।”

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন আলোচনায় নিযুক্ত ছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বিশেষ দূত ফ্রাঙ্ক লোয়েনস্টেইন। এই হামলার ঘটনাগুলো কতখানি ইরানে প্ররোচনায় হচ্ছে সেটি শতভাগ নিশ্চিত না হলেও তিনি বলছেন, “এ ধরনের কয়েক ডজন হামলা তারা আগেও চালিয়েছে। কিন্তু এর আগে তারা কখনো কোনও মার্কিন সেনাকে হত্যা করেনি।”

শেষ পর্যন্ত এ দফায় যুক্তরাষ্ট্র-ইরান কোন যুদ্ধের দিকে গড়াবে কিনা সেটি স্পষ্ট না হলেও মার্কিন সেনা নিহত হওয়ায় এই উত্তেজনা সহসা থামছে না এমন ইঙ্গিতই করছেন বিশ্লেষকরা।

মার্কিন কর্মকর্তারা হামলার ঘাঁটির নাম দেন টাওয়ার-২২

ছবির উৎস, PLANET LABS/AP

ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের বৈরিতার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্রের বৈরিতার শুরুটা হয়েছিলো ১৯৫৩ সালে। ঐ সময় ইরানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মোসাদেক তেল সম্পদকে সরকারিকরণ করতে চেয়েছিলেন। কারণ, এর বড় একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করতো ব্রিটিশরা এবং বেশিরভাগ ইরানিরা সেখান থেকে কোনও সুবিধা পেতো না।

কিন্তু এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হন। মনে করা হয় যে এই অভ্যুত্থানের পেছনে মার্কিন ও ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের ভূমিকা ছিল।

এরপর যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে মোহাম্মদ রেজা শাহ ক্ষমতা গ্রহণ করেন এবং সাভাক নামক গোপন পুলিশ বাহিনী দিয়ে তার বিরোধিতাকারীদের দমন করেন।

তখন ইসলামপন্থী নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি তার প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে যান। তবে শাহের বিরোধিতা করার পর তিনি নির্বাসনে ছিলেন।

কিন্তু, সত্তরের দশকে ইরানের জনগণের বড় অংশ শাহের বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।

১৯৭৯ সালে প্যারিস থেকে খামেনি আবার ইরানে ফিরে আসেন। ঐ বছর থেকেই খামেনি হয়ে উঠলেন দেশটির প্রথম ‘সুপ্রিম লিডার’।

সেইসময় নতুন ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানে আমেরিকাবিরোধী মনোভাব তুঙ্গে ছিল। সেই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৯ সালে খামেনিপন্থী ছাত্ররা তেহরানের মার্কিন দূতাবাসে ঢুকে পড়ে। ৫২ জন আমেরিকানকে ৪৪৪ দিন জিম্মি করে রাখে তারা।

কাসেম সোলেইমানি হত্যার 'চরম প্রতিশোধ' নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ইরানের শীর্ষ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি

ছবির উৎস, Getty Images

এই ঘটনায় প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

১৯৮০ সালে ইরান-ইরাক যুদ্ধ শুরু হয়। ইরানে হামলার মাধ্যমে তিক্ত এক যুদ্ধ শুরু করে ইরাক। সেই যুদ্ধে ইরাককে নানাভাবে সাহায্য করতে থাকে যুক্তরাষ্ট্র। ধারণা করা হয়, সেই যুদ্ধে প্রায় ১০ লাখ মানুষ মারা গেছে। টানা আট বছর পর একটা যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হন খামেনি।

এরপর এই দুই দেশের সম্পর্ক তিক্ত হতেই থাকে। তেহরান ইঙ্গিত দেয়, আমেরিকা এবং ইসরায়েল তাদের প্রধান শত্রু। এরপর, ১৯৮৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের একটি যুদ্ধজাহাজ গুলি করে তেহরানের একটি বিমানকে ভূপাতিত করে। এটাকে ভুল হিসেবে স্বীকার করলেও এর জন্য কখনও ক্ষমা চায়নি যুক্তরাষ্ট্র।

কিন্তু ২০০০ সালের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের নজর পড়ে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ওপর। তখন আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ায় ইরানের তেল রপ্তানি ও অর্থনীতিতে ব্যাপকভাবে প্রভাব পড়ে।

চুক্তি থেকে ২০১৮ সালে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

ছবির উৎস, Getty Images

২০১৫ সালের চুক্তির আলোকে ইরান তাদের পরমাণু কার্যক্রম সীমিত করতে সম্মত হয়েছিলো এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের পরিদর্শনের অনুমতি দিয়েছিলো। তবে শর্ত ছিল যে ইরানের ওপর থেকে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হবে।

কিন্তু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালে এ চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ান এবং বলেন যে তিনি পরমাণু কর্মসূচি কমিয়ে আনা ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি স্থগিত করতে ইরানকে একটি নতুন চুক্তিতে বাধ্য করবেন।

ইরান তার এ বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে এবং ঘোষণা করে যে তারা আর ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির দ্বারা আরোপিত বিধিনিষেধ মানবে না।

এরপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে ২০২০ সালে ইরাকে মার্কিন ড্রোন হামলায় হত্যা করা হয় ইরানের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর সামরিক কমান্ডার কাসেম সোলেইমানিকে।

এই হত্যাকাণ্ডের পর দুই দেশের মধ্যকার উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে এবং এই উত্তেজনার সাথে নতুন করে যোগ হলো টাওয়ার ২২-এ হামলার কারণে এই তিন মার্কিন সেনা সদস্যের নিহত হওয়ার ঘটনা।

বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: