Source : BBC NEWS

ছবির উৎস, EPA-EFE/Shutterstock
২৭ মিনিট আগে
অভিবাসন বিরোধী তল্লাশির জেরে আবারো উত্তাল হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলস শহরের কেন্দ্রস্থল। বিক্ষোভকারীরা যানবাহনে আগুন দিয়েছে বলে জানিয়েছে সেখানকার পুলিশ।
লস অ্যাঞ্জেলস পুলিশ বিভাগ বলছে, আগুন নেভানোর জন্য তারা ওই এলাকায় যাওয়ার চেষ্টা করছে।
এ নিয়ে সেখানে তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভকারীদের টিয়ার শেল ব্যবহার করে পিছু হটানোর নির্দেশ দিয়ে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর সেনা মোতায়েনের নির্দেশ বাতিলের জন্য মি. ট্রাম্পের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। আরেকজন ডেমোক্র্যাটিক গভর্নর প্রেসিডেন্টের নির্দেশকে ‘উদ্বেগজনক ক্ষমতার অপব্যবহার’ বলে উল্লেখ করেছেন।
ওদিকে বিক্ষোভকারীরা শহরের কেন্দ্রস্থলে একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অচল করে দেয়ার পর পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করেছে।
সড়কটি আবার চালু করার জন্য বেশ কয়েকজনকে আটক করতে হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। যদিও শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সড়কটি একবার চালুর পরপরই আবার বন্ধ করে দিতে হয়েছে বলে তারা জানিয়েছে।
সামাজিক মাধ্যম এক্স- এ পুলিশ জানিয়েছে: “সড়কটিতে বিভিন্ন জিনিস ছোঁড়ার কারণে ও পুলিশের বেশ কয়েকটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ১০১ ফ্রিওয়ে পরবর্তী নোটিশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে”।

ছবির উৎস, Reuters
সবশেষ যা যা ঘটেছে
বিক্ষোভকারীরা যখন তৃতীয় দিনের মতো সমবেত হচ্ছিলো, তখন আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের লক্ষ্য করে টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ছুঁড়েছে।
গত শনিবার ইমিগ্রেশন বিভাগের কর্মীরা যেখানে অভিযান চালিয়েছিলো, বিক্ষোভকারীরা সেখানেই সমবেত হচ্ছিলো, যার ফলে একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো।
শহরের মেয়র কারেন ব্যাস বলেছেন, প্রশাসনের উস্কানির কারণেই এই বিশৃঙ্খল অবস্থার তৈরি হয়েছে।
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম বলেছেন, বিক্ষোভ দমাতে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা উত্তাপ আরও বাড়িয়েছে ।
গভর্নরের অনুরোধ ছাড়াই কোনো প্রেসিডেন্ট কর্তৃক ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের সিদ্ধান্ত অনেকটাই নজিরবিহীন।
টানা দুই দিন বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ন্যাশনাল গার্ডের দুই হাজার সদস্য মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ট্রাম্প সতর্ক করে বলেছেন, বিক্ষোভ অব্যাহত থাকলে সব জায়গা সৈন্য মোতায়েন করা হবে। অন্যদিকে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিটে হেগসেথ বলেছেন, উত্তেজনা বাড়লে মেরিন সেনা ডাকা হতে পারে।
এর আগে দুই দিনও সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে।

ছবির উৎস, Reuters
ট্রাম্প বিক্ষোভকারীদের ‘পেইড বিদ্রোহী’বললেন
নিজের সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ডোনাল্ড ট্রাম্প কোনো ধরনের প্রমাণ না দিয়েই বিক্ষোভকারীদের ‘পেইড বিদ্রোহী’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
গভর্নর গ্যাভিন নিউসম ও মের ব্যাস-এর দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার জন্য লস অ্যাঞ্জেলসের মানুষের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত বলেও তিনি তার পোস্টে উল্লেখ করেছেন।
“এরা প্রতিবাদকারী নয়, এরা সমস্যা সৃষ্টিকারী এবং বিদ্রোহী,” লিখেছেন মি. ট্রাম্প।
লস অ্যাঞ্জেলস মেয়র কারেন ব্যাস বিক্ষোভকারীদের তাদের বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ রাখার আহবান জানিয়েছেন এবং বলেছেন ‘আমরা লস অ্যাঞ্জেলসের মানুষের সাথে আছি’।
ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের (আইসিই) অভিযানে এ সপ্তাহে লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে ১১৮ জন অনিবন্ধিত অভিবাসীকে আটক করা হয়েছে।
গভর্নর গ্যাভিন নিউসম এ অভিযানের নিন্দা করেছেন।

ছবির উৎস, Reuters
৫০০ মেরিন সেনা প্রস্তুত
ইউএস নর্দার্ন কমান্ডের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, লস অ্যাঞ্জেলসের বিক্ষোভের প্রেক্ষাপটে প্রায় ৫০০ মেরিন সেনাকে মোতায়েনের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তিগত সম্পদ রক্ষায় প্রতিরক্ষা দপ্তরকে সহযোগিতার জন্য প্রয়োজন হলে মেরিন মোতায়েন করা হবে।
এর মধ্যে ক্যালিফোর্নিয়া আর্মি ন্যাশনাল গার্ডের প্রায় দুই হাজার সদস্য লস অ্যাঞ্জেলসে মোতায়েন করা হয়েছে।
একজন কর্মকর্তা সিবিএসকে জানিয়েছেন যে, গার্ড সদস্যরা সশস্ত্র এবং তারা শক্তি প্রয়োগের ক্ষেত্রে নীতি মেনে চলছেন অর্থাৎ তারা আত্মরক্ষার জন্য শক্তি প্রয়োগ করবেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের বর্তমান প্রশাসনে ‘সীমান্ত জার’ হিসেবে পরিচিত টম হোম্যান শনিবার ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘আমরা লস অ্যাঞ্জেলেসকে নিরাপদ করব।’
বিক্ষোভের আরও কিছু ছবি

ছবির উৎস, Reuters

ছবির উৎস, EPA

ছবির উৎস, EPA

ছবির উৎস, Reuters

ছবির উৎস, EPA