Home LATEST NEWS bangla সর্বশেষ সংবাদ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির বৈঠকে কোন কোন বিষয়ে আলাপ...

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির বৈঠকে কোন কোন বিষয়ে আলাপ হলো

5
0

Source : BBC NEWS

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধিরা

ছবির উৎস, CA PRESS WING

২৫ মে ২০২৫

দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে শনিবার বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এই বৈঠকে দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নির্বাচন নিয়ে আলোচনার কথা জানিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো।

বৈঠক শেষে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, তারা সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট নির্বাচনের রোডম্যাপ চেয়েছেন। একই সাথে সরকারকে নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়ে কাজ করার আহ্বানও জানিয়েছেন তারা।

এমন সময়ে এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছে যখন বিএনপি রাজপথে কর্মসূচি রেখেছে এবং একই সাথে সরকারের প্রতি তাদের সমর্থন আর অব্যাহত না রাখার ইঙ্গিতও দিচ্ছে।

আর এই বৈঠকে, প্রধান উপদেষ্টাকে সংস্কার, জুলাই-অগাস্টের গণহত্যার বিচারসহ বেশ কিছু ইস্যুতে আলোচনার কথা জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।

বৈঠক শেষে জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “যে পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা পদ ছাড়তে চেয়েছেন আমরা তাকে সে অবস্থান থেকে সরে আসার আহবান জানিয়েছি”।

নির্বাচন, সংস্কার ও রোডম্যাপ ইস্যুতে জামায়াতে ইসলামী তাদের দলীয় অবস্থান স্পষ্টসহ বেশ কিছ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানায় দলটি।

জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনের ওপর তাদের আস্থা নেই। নির্বাচনের পরিবেশ বা লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। নির্বাচন কমিশন সংস্কার করে যেন সেটা তৈরি করা হয়। তারা জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচনও চেয়েছে।

সম্প্রতি নির্বাচনের রোডম্যাপসহ বেশ কিছু ইস্যুতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাথে বিএনপির এক ধরনের টানাপোড়েন তৈরি হয়। শেষ পর্যন্ত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদের ইস্যুকে সামনে এনে রাস্তা আটকে আন্দোলন শুরু করে বিএনপি নেতাকর্মীরা।

এছাড়া মিয়ানমারের রাখাইনে ত্রাণ পাঠানোর একটি চ্যানেল কিংবা চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনায় বিদেশিদের দায়িত্ব দেয়া নিয়েও বিএনপির পক্ষ থেকেও আপত্তি তোলা হয়।

এমন পরিস্থিতির মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগের ইচ্ছা পোষণ করছেন বলে খবর সামনে আসে।

তবে শনিবার একনেক বৈঠকে শেষে উপদেষ্টা পরিষদের অনির্ধারিত এক বৈঠক হয়। এরপর জানানো হয়, প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করছেন না।

অযৌক্তিক দাবি দাওয়া, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও এখতিয়ার বহির্ভূত বক্তব্য এবং কর্মসূচি দিয়ে যেভাবে স্বাভাবিক কাজের পরিবেশ বাধাগ্রস্ত করে তোলা হচ্ছে এবং জনমনে সংশয় ও সন্দেহ সৃষ্টি করা হচ্ছে, তা নিয়ে বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয় বলেও জানানো হয়।

পরে রাতে তিন দলের সঙ্গে বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, সবগুলো দল প্রধান উপদেষ্ঠাকে অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে।

বৈঠক শেষে বিএনপির সংবাদ সম্মেলন

বিএনপি চায় নির্বাচনের রোডম্যাপ

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রথমেই কথা বলেন প্রতিনিধি দলের প্রধান খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বিএনপি নেতাদেরকে সাক্ষাৎ করার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। “কিন্তু আলোচনার বিষয়বস্তু আমাদেরকে আগে জানানো হয়নি।”

তিনি জানান, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিএনপি যা ‘আন্দাজ’ করতে পেরেছিলো, তার ওপর ভিত্তি করে তারা একটি লিখিত বক্তব্য নিয়ে এসে প্রধান উপদেষ্টার কাছে পেশ করেন এবং সেই ভিত্তিতেই আলোচনা হয়।

ওই লিখিত বক্তব্যের সারাংশ সাংবাদিকদের পড়ে শোনান খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তাতে বলা হয়, বাংলাদেশে গণতন্ত্র উত্তরণের লক্ষ্যে বিএনপি নির্বাচনের রোডম্যাপ দাবি করে আসছে এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সরকারের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার স্বার্থে “বিতর্কিত উপদেষ্টাদের বাদ দিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠনের জন্য দাবি” জানিয়েছে।

বিএনপি’র নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের আমলে রাজনৈতিকভাবে কিংবা পারিবারিকভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই, আ’লীগের বিচার সবচেয়ে বেশি দাবি করে বিএনপি — বলা হয় ওই বক্তব্যে।

“সুতরাং, বিএনপি যদি ক্ষমতায় যায়, তাহলে স্বাধীন বিচার বিভাগের মাধ্যমে বিচার কাজ সম্পন্ন করা হয়।”

নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সংস্কার কার্যক্রম অবিলম্বে সম্পন্ন করে ডিসেম্বরের মাঝে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য অতিদ্রুত একটি রোডম্যাপ দেওয়ার দাবিও জানিয়েছে দলটি। কারণ, এই সরকারের মূল দায়িত্ব সুষ্ঠু নির্বাচন।

“যেকোনো উছিলায় নির্বাচন যত বিলম্ব করা হবে, আমরা মনে করি, জাতির কাছে আবার স্বৈরাচার ফিরে আসার ক্ষেত্রে প্রস্তুত হবে। এর দায়-দায়িত্ব বর্তমান সরকার ও তাদের সাথে সংশ্লিষ্টদের ওপর বর্তাবে।”

এরপর মি. হোসেন লিখিত বক্তব্য অনুযায়ী বলেন, “বিএনপি কখনোই প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চায়নি। বরং, প্রথমদিন থেকেই এই সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে আসছে।”

এরপর তাকে সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করে যে তারা সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপের আশ্বাস পেয়েছে কিনা।

এর সরাসরি উত্তর দেননি মি. হোসেন। বরং, একই প্রশ্নের উত্তরে পাশ থেকে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, “স্পেসিফিক কোনো কথা হয় নাই। উনি স্পেসিফিক জানান নাই। আমরা আমাদের দাবি জানিয়েছি।”

আজকের আলোচনায় তারা সন্তুষ্ট কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এখনই প্রতিক্রিয়া জানানোর দরকার নাই। ওনাদের প্রেস সেকশন কী বলে- তারপর আমরা প্রতিক্রিয়া জানাবো।”

এর আগে খন্দকার মো মি. হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, “আলোচনার মাঝে সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন এসেছে। আমরা বলেছি, একটার সাথে আরেকটির কোনো সম্পর্ক নাই। কারণ সংস্কার চলমান বিষয়। এটা চলতে থাকবে।”

“আমরা আশা করেছি, এই সরকার সকলের সাথে ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটা সংস্কার প্রস্তাব দেবে, যা চলমান থাকবে। ভবিষ্যতে যদি জনগণ আমাদেরকে ক্ষমতায় বসায়, আমরা সেই সংস্কার বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা করবো।”

বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন:
জামায়াতের প্রতিনিধি দলের সাথে প্রধান উপদেষ্টা

ছবির উৎস, CA PRESS WING

বিচার ও সংস্কার নিয়ে জামায়াত যা জানাল

বিএনপির সাথে বৈঠকের পরপরই জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি দলের সাথে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। সেখান থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন দলটির আমির শফিকুর রহমান।

এসময় তিনি বলেন, “আমরা বলেছি, দুইটা বিষয় স্পষ্ট হওয়া দরকার। নির্বাচনটা কখন হবে? আপনি যে সময়সীমা দিয়েছেন, এর ভেতরে জনগণের কোনো বড় ধরনের ভোগান্তি না হয়ে একটা কমফোর্টেবল টাইমে নির্বাচন হওয়া উচিত। আর দুই নম্বর হলো, নির্বাচনের আগে সংস্কার ও দৃশ্যমান বিচারের কিছু প্রক্রিয়া জনগণের সামনে আসতে হবে। সংস্কার শেষ না করে যদি নির্বাচন হয়, জনগণ এই নির্বাচনে তাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে না।”

“আবার সব সংস্কার এই সরকারের পক্ষে করা সম্ভবও নয়” বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এরপর তাকে উপস্থিত সাংবাদিকদের একজন প্রশ্ন করেন যে আজকের আলাপে জামায়াতে ইসলামী কোনো সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে কিনা। উত্তরে তিনি বলেন, “আমরা কোনো সময় বেঁধে দেইনি। আমরা কমফোর্টেবল দুইটা টাইম জাতিকে জানিয়েছি। যদি সংস্কার শেষ হয়, তাহলে ফেব্রুয়ারির মধ্যভাগে এটা (নির্বাচন) হতে পারে। আর যদি আরেকটু সময় লাগে, তাহলে রোজার পরপর হতে হবে। তারপর এটাকে টেনে লম্বা করলে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব হবে না।”

জামায়াতের দুই দাবির বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা কী বলেছেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, “তিনি গভীর মনোযোগ সহকারে শুনেছেন এবং আমাদের আস্থা হয়েছে যে তিনি বিষয়টাকে ইতিবাচকভাবে নিয়েছেন।”

বিএনপি যে তিনজন উপদেষ্টার পদত্যাগ চেয়েছে, সে বিষয়ে জামায়াতের অবস্থান জানতে চান সাংবাদিকরা।

উত্তরে তিনি বলেন, “পদত্যাগ চাইলো বিএনপি, আর ফতোয়া দেবে জামায়াতে ইসলামী। এটা কি মানায়? যারা পদত্যাগ চেয়েছে, তারাই ব্যাখ্যা করবে। আমরা কারও কোনো পদত্যাগ চাইনি।”

সরকার কেন জামায়াতে ইসলামীকে এই বৈঠকে ডেকেছিল জানতে চাইলে জামায়াত আমীর বলেন, আমাদের ব্যাপার আর বিএনপির ব্যাপার একরকম না। একটু পার্থক্য আছে। আমরা কিন্তু নিজেরাই চেয়েছি। টাইমটা ফিক্স-আপ হয়েছে। দাওয়াত আমরা পেয়েছি, কিন্তু এর আগে আমরাই চেয়েছি এবং আমাদের চাওয়ার প্রেক্ষিতেই আজকে সন্ধ্যা ৬টায় সময় নির্ধারিত হয়েছিলো। কিন্তু আমাদের অন্য একটি দলীয় কর্মসূচির কারণে আমরা চেয়েছিলাম, আমাদেরকে আরও দুই ঘণ্টা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

“উনি শুধু এটুকুই বলেছেন, দেশ আমাদের সবার। আমি (মুহাম্মদ ইউনূস) অবশ্যই একটি অর্থবহ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন দিতে চাই। আমি যেন-তেন কোনো নির্বাচন দিতে চাই না,” যোগ করেন জামায়াতের আমির।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এনসিপি প্রতিনিধিদের বৈঠক

ছবির উৎস, CA PRESS WING

যা জানালো এনসিপি

“সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিলো, ৩০ দিনের মাঝে জুলাই ঘোষণাপত্র হবে। নির্ধারিত সময়ের মাঝে যেন জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করা হয়, সে বিষয়ে আমরা আহ্বান জানিয়েছি এবং সরকারের, ড. ইউনূস স্যারের পক্ষ থেকে আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে,” যোগ করেন তিনি।

“জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের পরিবারের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া ধীর গতিতে আগাচ্ছে। যে সঞ্চয়পত্র দেওয়ার কথা ছিল, তা এখনও অনেক শহীদ পরিবার পায়নি। মাসিক ভাতাও শুরু হয়নি। আমরা বলেছি যে আর্থিক সহায়তাসহ পুনর্বাসনের যে প্রতিশ্রুতিগত দাবি, তা যেন নিশ্চিত করা যায়,” বলেন নাহিদ।

এক পর্যায়ে তাকে বিএনপি’র তরফ থেকে দুই ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগ চাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। তখন তিনি বলেন, “স্পষ্টভাবে বলেছি, ছাত্র উপদেষ্টাদের সাথে এনসিপির সম্পর্ক নেই। ছাত্র উপদেষ্টারা গণঅভ্যুত্থানের প্রতিনিধি হিসেসাবে সরকারে গিয়েছেন, সরকারকে বৈধতা দিয়েছেন। ফলে তাদের সাথে কোনো রাজনৈতিক দলের বা এনসিপির সম্পর্ক নাই। আজ সকালেও তা পরিষ্কার করেছি।”

“বরং, গণঅভ্যুত্থানের প্রতিনিধি আকারে তারা গিয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে কাজ করছে। সেখানে তাদেরকে হেয় করা, তাদেরকে অপমান করা, এ বিষয়ে আমরা নিন্দা জানিয়েছি। আমাদের সাথে তাদেরকে জড়িয়ে, ট্যাগ দিয়ে পদত্যাগ করতে বলাটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক,” যোগ করেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের ভাবনা’র বিষয়ে এনসিপি’র অবস্থান সম্বন্ধে নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা বলেছি— উনি যাতে দায়িত্বে থাকেন। দায়িত্বে থেকে আলোচনার মাধ্যমে সকল পক্ষের সকল সমস্যা সমাধান করেন। কোনো রাজনৈতিক দল নয়, জনগণ ও গণঅভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতা, তাদের আহ্বানেই তিনি দায়িত্বে এসেছিলেন। তাদের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্যই তিনি কমিটেড। কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতি উনি কমিটেড না। উনি যেন এ বিষয়টা যেকোনো সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে বিবেচনা করেন।”

সরকার কেন এনসিপিকে ডেকেছে? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি আরও বলেন, “বর্তমান যে পরিস্থিতি, তা নিয়ে আলোচনা করতে। এই পরিস্থিতিতে উনি কাজ করতে পারছেন না। উনি দায়িত্ব ছেড়ে দেদিবেন কিনা। এ বিষয়ে ওনার চিন্তাভাবনা রয়েছে। সেই প্রেক্ষিতেই ওনার সাথে আজকের এই বৈঠক।”

“সরকার বা ড. ইউনূস হতাশা ব্যক্ত করেছেন, কারণ যেই প্রতিশ্রুতি নিয়ে উনি দায়িত্বে এসেছেন… সেসময় আমরা উনাকে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তীতে একটি নতুন বাংলাদেশ গঠনের জন্য আহ্বান করেছিলাম… সকলেই জনগণের কাছে নতুন বাংলাদেশ গঠনের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছি।”

“সেই প্রতিশ্রুতি থেকে কোনো কোনো পক্ষ সরে আসছে বলে মনে করছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ওনাকে চাপ প্রয়োগ করে বিভিন্ন দাবি আদায়ের চেষ্টা চলছে। এর ফলে এইভাবে ওনার পক্ষে কাজ করা সম্ভব নয় এবং সংস্কার বা পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়। সেই জায়গা থেকে উনি হতাশা ব্যক্ত করেছেন।”

তিনি বলেন, এনসিপি’র তরফ থেকে বলা হয়েছে, মুহাম্মদ ইউনূস যেন “কোনো রাজনৈতিক দল নয়, গণঅভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতার প্রতি কমিটেড থাকেন।”

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের ব্রিফিং

ছবির উৎস, CA PRESS WING

জুন ৩০ কাট-অফ টাইম: প্রেস সচিব

তিনটি দলের সাথে বৈঠকের পর এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। বৈঠকের আলোচনা ও সরকারের অবস্থান সম্পর্কে জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

তিনি বলেন, “তারা (রাজনৈতিক দলগুলো) বলেছে, তার (অধ্যাপক ইউনূসের) নেতৃত্বে তাদের আস্থা আছে। তারা পদত্যাগের বিষয়ে তাকে অনুরোধ করেছেন… ওনার নেতৃত্বেই যেন ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন হয়। নির্বাচনের বিষয়ে বিএনপি ডিসেম্বরের মাঝে ইলেকশন চেয়েছে। জামায়াত মনে করে, সংস্কার প্রক্রিয়া শেষ করতে ডিসেম্বর লেগে যাবে… প্রফেসর ইউনূস তিনটি পার্টিকেই বলেছে যে ইলেকশন ডিসেম্বরের মাঝেই হবে। জামায়াত তার টাইমলাইনকে সমর্থন জানিয়েছে। এনসিপিও একই।”

প্রেস সচিব মি. আলম আরও বলেন, নির্বাচন আগামী বছরের জুনের ৩০ তারিখের মধ্যেই হবে বলে প্রধান উপদেষ্টা বিএনপিকে জানিয়েছেন।

“প্রফেসর ইউনূস বিএনপির মিটিং-এ বলেছেন, জুন ৩০ কাট-অফ টাইম। জুনের ওই পাড়ে যাবে না। উনি এক কথার মানুষ। উনি যে কথাটা বলেন, সে কথাটা রাখেন… জুন ৩০ তারিখ একটা সুনির্দিষ্ট ডেট,” যোগ করেন তিনি।

শফিকুল আলম বলেন, নির্বাচন কমিশনের বিষয়ে “এনসিপি ও জামায়াত মনে করে না যে এখন যে অবস্থায় আছে, তাতে ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশনের যে পরিবেশ দরকার, সেই পরিবেশ নাই। কোনো লেভেল-প্লেয়িং ফিল্ড নাই। তারা জোর দিয়েছে, যাতে ইলেকশন কমিশনের সংস্কারের মাধ্যমে লেভেল-প্লেয়িং ফিল্ড এনসিওর (নিশ্চিত) করা হয়।”

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, এ মাসেই জুলাই হত্যাযজ্ঞের বিচার শুরু হবে। পার্টিগুলো তাকে অনুরোধ করেছেন, যেন দ্রুত হয়।”

আজকের বৈঠকের পর দেশের রাজনৈতিক সংকট কাটবে কিনা, জিজ্ঞেস করলে মি. বলেন, “এটা সংকটের কী হলো, আমরা জানি না। আজকে খুবই সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে বাংলাদেশের তিনটি নেতৃস্থানীয় পার্টির সাথে প্রধান উপদেষ্টার মিটিং হয়েছে।”

“এনসিপি স্থানীয় সরকার নির্বাচন চেয়েছে। তারা মনে করে, এটা হওয়া উচিত। অনেকদিন ধরেই বাংলাদেশে নির্বাচন হচ্ছে না। তারা খুব জোর দিয়েছে, যাতে দ্রুত এটা শুরু হয়। সেইসাথে তারা পুরো আওয়ামী লীগ আমলে যত নির্বাচন হয়েছে, প্রত্যেকটিকে ওরা অবৈধ ঘোষণা করার জন্য অনুরোধ করেছে।”

তিন উপদেষ্টার পদত্যাগ প্রসঙ্গে মি. আলমের বক্তব্য, “উনি (প্রধান উপদেষ্টা) এটা শুনেছেন।”

উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠনের কোনো সম্ভাবনা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “বিএনপি তাদের কথা বলেছে, আমরা শুনেছি।”