Home LATEST NEWS bangla সর্বশেষ সংবাদ প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে বিএনপিতে ‘তীব্র ক্ষোভ’, নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক সংকটের আশঙ্কা

প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে বিএনপিতে ‘তীব্র ক্ষোভ’, নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক সংকটের আশঙ্কা

3
0

Source : BBC NEWS

তারেক রহমান ও মুহাম্মদ ইউনূস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণ বিএনপিকে ‘ক্ষুব্ধ’ করেছে এবং পাশাপাশি দলটি মনে করে ‘নির্বাচনকে বিলম্বিত করার সুযোগ তৈরির জন্যই’ এপ্রিল মাসে নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে।

শুক্রবার সন্ধ্যার ওই ভাষণে মি. ইউনূস ‘শব্দ চয়নে রাজনৈতিক ভব্যতার সীমা অতিক্রম’ করেছেন এবং একটি ‘বিশেষ রাজনৈতিক গোষ্ঠীর দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন’- এমন অভিযোগ তুলেছে দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, নির্বাচনের যে সময় প্রধান উপদেষ্টা দিয়েছেন সেটি ‘বাস্তবতার নিরিখেই’ তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।

“গণতন্ত্রে উত্তরণ বিলম্বিত হলে সংকট ঘনীভূত হবে। প্রধান উপদেষ্টা ও তার উপদেষ্টামণ্ডলী নিরপেক্ষ চরিত্র হারিয়েছেন। এপ্রিল কোনোভাবেই নির্বাচন আয়োজনের জন্য যথাযথ সময় নয়,” বলছিলেন তিনি।

তবে জামায়াতে ইসলামীসহ আরও কিছু রাজনৈতিক দল এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচনের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে। আবার কিছু দল মনে করছে “নির্বাচনের অন্তত একটা সময় যে সরকার জানিয়েছে” এটিই তাদের কাছে বড় স্বস্তির বিষয়।

বিশ্লেষকরা কেউ কেউ বলছেন, নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে বিএনপি ও সেনাপ্রধানের বক্তব্যের বিপরীতে ‘জামায়াতের পরামর্শ’ গ্রহণ করার মধ্য দিয়ে মি. ইউনূস বোঝাতে চেয়েছেন যে তিনি চাপের মুখে কিছু মেনে নেবেন না।

“নির্বাচনের জন্য এপ্রিলকে বেছে নেয়ার মধ্যে একটা জিদের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। ওরা চাইলো কেন, তাই দেবো না- মনে হয়ে এই ইগো থেকেই সংখ্যাগরিষ্ঠ দলগুলোর মতকে উপেক্ষা করা হয়েছে,” বিবিসি বাংলাকে বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহাম্মদ সাইফুল আলম চৌধুরী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরই আরেকজন শিক্ষক মোহাম্মদ মজিবুর রহমান বলছেন, নির্বাচন কেন ডিসেম্বরের মধ্যে করা যাবে না কিংবা এপ্রিলে হলে জাতির কী কী সুবিধা হবে-সেটি প্রধান উপদেষ্টা পরিষ্কার করতে ব্যর্থ হয়েছেন।

বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন:
শুক্রবার ভাষণ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস

ছবির উৎস, CA PRESS WING

প্রধান উপদেষ্টা ভাষণে কী বলেছেন

শুক্রবার জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধের যেকোনো একটি দিনে অনুষ্ঠিত হবে। এই ঘোষণার ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের বিস্তারিত রোডম্যাপ দেবে বলেও জানান প্রধান উপদেষ্টা।

“আমি বারবার বলেছি এই নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। এই সময়ের মধ্যে দেশে নির্বাচন উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টির জন্য যা যা করা দরকার, সরকার তাই করছে,” বলেছেন তিনি।

এছাড়া রাখাইনের জন্য মানবিক করিডর নিয়ে ভুল তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ করেছেন তিনি। “যারা অসত্য কল্পকাহিনী বানিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে ক্রমাগত বিভ্রান্ত করে অশান্তি সৃষ্টিতে নিয়োজিত, এটা তাদেরই শিল্পকর্ম,” বলেছেন তিনি।

চট্টগ্রাম বন্দরকে “বাংলাদেশের অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড” উল্লেখ করে তিনি এই হৃদপিণ্ডকে বড় ও মজবুত করার কথা বলেছেন। তিনি বলেন, “এ জন্য আমরা যাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি তারা বন্দর ব্যবস্থাপনায় বিশ্বের সেরা, সবচেয়ে অভিজ্ঞ”।

যদিও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল করিডর ও বন্দর বিদেশিদের দেওয়ার পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত

বিএনপি কী বলছে

শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের পরপরই বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক বসে। ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন লন্ডনে থাকা দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্যের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, সভায় প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে ও পুরো বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ ছাড়াও বন্দর ও করিডর ইস্যুতে মি. ইউনূসের বক্তব্য নিয়ে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।

এরপর রাতেই সংবাদ মাধ্যমে স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত জানিয়ে যে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়, তাতে বলা হয়, “দীর্ঘ ভাষণে তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) বন্দর, করিডোর ইত্যাদি এমন সব বিষয়ে অবতারণা করেছেন যা তাঁরই ভাষায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তিনটি ‘ম্যান্ডেটের মধ্যে পড়ে না”।

ভাষণে “তিনি শব্দ চয়নে রাজনৈতিক ভব্যতার সীমা অতিক্রম করায়” সভায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয় বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

বিএনপির অভিযোগ যে ডিসেম্বরের মধ্যে কেন নির্বাচন করা যাবে না- তার কোনো কারণ প্রধান উপদেষ্টা তার ভাষণে তুলে ধরেননি।

স্থায়ী কমিটির বক্তব্যে বলা হয়েছে, “এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন হলে একদিকে আবহাওয়ার সংকট এবং অন্যদিকে রমজানের মধ্যে নির্বাচনি প্রচারণা ও কার্যক্রম এমন এক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে, যা নির্বাচনকে পিছিয়ে দেয়ার কারণ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে”।

“এই সভা রমজান, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বা সমপর্যায়ের পরীক্ষা এবং আবহাওয়া ইত্যাদি বিবেচনায় ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তাব পুনর্ব্যক্ত করছে,” বলা হয়েছে দলের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে।

এসবের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সালাউদ্দিন আহমেদ বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, উপদেষ্টা পরিষদের আচরণে মনে হয় বিএনপিই তাদের প্রতিপক্ষ।

“অথচ আমরা সহযোগিতা দিয়ে আসছি। তারা বিএনপির প্রতি বিমাতাসূলভ আচরণ করছে। অথচ নতুন সৃষ্ট দল এবং অন্য আরেকটি দলের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা,” বলছিলেন মি. আহমেদ।

তিনি বলেন বিএনপি ও সমমনা দলগুলো দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করেই ডিসেম্বরের কথা বলেছিলো। “কিন্তু এখন যা হয়েছে তাতে সংকট তৈরি হবে। আমরা এখনো বলছি ডিসেম্বরে নির্বাচনের জন্য সবচেয়ে ভালো সময়,” বলছিলেন তিনি।

তবে সরকার যদিও তার অবস্থান পরিবর্তন না করে তাহলে বিএনপি কী করবে এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজি হননি দলটির সিনিয়র নেতারা।

একজন নেতা শুধু বলেছেন, বিএনপি দ্রুততম সময়েই তার অবস্থান পরিষ্কার করেছে। “বল এখন সরকারের কোর্টে, দেখা যাক তারা কী করে,” বলছিলেন তিনি। যদিও তিনি তার নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করেছেন।

গত দোসরা জুন প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে ছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা

ছবির উৎস, CA PRESS WING

বিশেষ গোষ্ঠীর প্রভাব!

বিএনপিসহ ৩০টির বেশি রাজনৈতিক দল ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দাবি করলেও জামায়াত ও এনসিপির অবস্থান বরাবরই ভিন্ন।

জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে এপ্রিলে নির্বাচন হতে পারে- এমন মত দেয়া হয়েছিলো। আবার এনসিপি নির্বাচনের আগে সংস্কার ও বিচারের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার কথা বলে আসছিলো।

অর্থাৎ সেনাপ্রধানের পরামর্শ কিংবা বিএনপিসহ অধিকাংশ দলগুলোর দাবিকে উপেক্ষা করে সরকার জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির পরামর্শকেই নির্বাচনের জন্য গ্রহণ করেছে বলে অনেকে মনে করছেন।

সেদিকেই ইঙ্গিত করে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটি বলছে, সরকার বিশেষ রাজনৈতিক গোষ্ঠীর দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে।

সভার বক্তব্যে বলা হয়েছে, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার কথা বললেও একটি বিশেষ রাজনৈতিক গোষ্ঠীর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সিংহভাগ রাজনৈতিক দলের মতামত অগ্রাহ্য করে নিজেদের নিরপেক্ষতাকেই যেভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করছে, তাতে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের সম্ভাবনা নিয়ে দেশের জনগণ সঙ্গতভাবেই শঙ্কিত হতে পারে বলে সভা মনে করে”।

প্রসঙ্গত, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের বিষয়টি শুরুতেই আলোচনায় এনেছিলেন সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান।

গত বছর ২৪শে সেপ্টেম্বর বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেছিলেন যে, নির্বাচন যাতে আগামী আঠারো মাসের মধ্যে হতে পারে, সেজন্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার সম্পন্ন করতে “পরিস্থিতি যাই হোক না কেন” তিনি মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাবেন।

মূলত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর এটিই ছিল নির্বাচনের সময় নিয়ে প্রথম কোনো বক্তব্য, যা তখন আলোড়ন তুলেছিলো।

বিশ্লেষকরা অনেকেই মনে করেন, সেনাপ্রধানের এ বক্তব্যের পর থেকেই নির্বাচনের সময়সীমা সংক্রান্ত রোডম্যাপের জন্য সরকারের ওপর চাপ তৈরি হওয়া শুরু হয়।

এক পর্যায়ে গত ২৫শে মার্চ জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।

কিন্তু এরপর বিএনপিও ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের জন্য তাদের দাবির পক্ষে আরও শক্ত অবস্থান নিতে শুরু করে।

এ নিয়ে বিএনপি নেতাদের ক্রমাগত বক্তব্যের পর গত ২৮শে মে দলীয় এক সমাবেশে ভার্চুয়াল বক্তৃতায় দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন “আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন হতে হবে, ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।”

ওইদিন টোকিওতে থাকা প্রধান উপদেষ্টা সেখানে এক অনুষ্ঠানে বলেন যে শুধু একটি দলই ডিসেম্বরে নির্বাচন চাইছে এবং তার এ বক্তব্য বিএনপিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করে।

এরপর বিএনপিসহ অন্তত ৩০টি রাজনৈতিক দল বিবৃতি দিয়ে জানায় যে তারাও ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চাইছে।

এর আগে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবিতে তার সমর্থকদের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের কাছে অবস্থানের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ‘প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ’ নিয়ে গুঞ্জন ছড়ায়। যদিও তিনি বা তার অফিস থেকে এমন কোনো বক্তব্য আসেনি।

কিন্তু এরপর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মি. ইউনূসের যে বৈঠক হয়েছে তাতে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন ও দুজন উপদেষ্টাকে সরানোর দাবি করে বিএনপি। কিন্তু এসব দাবিকে সরকার কার্যত বিবেচনায় নেয়নি বলেই মনে করা হচ্ছে।

প্রধান উপদেষ্টার সাথে বিএনপি নেতাদের একটি বৈঠকের ছবি

ছবির উৎস, CA PRESS WING

জামায়াত ও এনসিপি যা বলেছে

প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের পর জামায়াতের আমির এক বিবৃতিতে নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণা করায় সন্তোষ প্রকাশ করেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, “তার এই ঘোষণায় জাতি আশ্বস্ত হয়েছে এবং ঘোষিত সময়ের মধ্যেই একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে জাতি আশা প্রকাশ করছে”।

অন্যদিকে এনসিপি বলেছে “জুলাই সনদ, ঘোষণাপত্র ও সংস্কারের ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হলে” ঘোষিত সময়ে নির্বাচনের বিষয়ে তাদের আপত্তি নেই।

বিশ্লেষকরা যা বলছেন

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন প্রধান উপদেষ্টা কয়েক দফা দলগুলোর সাথে আলোচনা করেও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নিজেদের মতো করে এবং সেটি মোটেও সুবিবেচনাপ্রসূত হয়নি বলেই মনে করেন তারা।

মধ্য মার্চ পর্যন্ত রোজা, এপ্রিলে উচ্চ তাপমাত্রা, বজ্রপাত, ঘূর্ণিঝড়সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের রেকর্ডের পাশাপাশি এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার কারণে ‘একটি উৎসবমুখর ও অংশগ্রহণমূলক’ নির্বাচনে এপ্রিল মাসকে যথাযথ নয় বলেই রাজনৈতিক দল ও বিশ্লেষকরা বলছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহাম্মদ মজিবুর রহমান মনে করেন, সবার মতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হলে এ নিয়ে বিতর্ক হতো না এবং ভাষণে কিছু বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা যে ভাষা প্রয়োগ করেছেন সেটি সঠিক ছিল না।

“নির্বাচন এপ্রিলের মতো প্রতিকূল সময়ে কেন করতে হবে সে বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা তিনি দেননি। জানুয়ারির মধ্যে না হলে সেটি পরবর্তী ডিসেম্বর পর্যন্ত বিলম্বিত হতে পারে এমন ভয়ও আছে অনেকের। আর সেটি হলে নির্বাচন আদৌ হয় কি-না সেই শঙ্কাও দেখা দিতে পারে”।

তার মতে “সব মিলিয়ে আবারো একটি অনিশ্চয়তা, আশঙ্কা ও অচলাবস্থার দিকেই দেশ যাচ্ছে কি-না সেই প্রশ্নও উঠবে এখন”।

আরেকজন বিশ্লেষক সাইফুল আলম চৌধুরী বলছেন, যেসব দলের সাথে প্রধান উপদেষ্টা বৈঠক করেছিলেন তাদের বেশিরভাগই দলই ডিসেম্বরে নির্বাচন চাইলো, কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা সেই সংখ্যাগরিষ্ঠের মতকে উপেক্ষা করেই তার সিদ্ধান্ত নিলেন।

“অথচ তিনিই আবার তার ভাষণে আশা প্রকাশ করেছেন সবচেয়ে বেশি দল, প্রার্থী ও ভোটার নির্বাচন অংশ নেবে, এটা কীভাবে হয়? সরকারের শুরু থেকেই তিনি জামায়াতের অব্যাহত সমর্থন পাচ্ছেন এবং তিনি শুনলেনও জামায়াতের পরামর্শই। স্বাভাবিকভাবে কেউ চাইলে তো দুয়ে দুয়ে চার মিলাতে পারেন,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।

তার মতে দীর্ঘদিন মাঠে থাকা নিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বারবার যেসব উদ্বেগের কথা আসছে তিনি তারও কোনো ব্যাখ্যা দেননি।