Home LATEST NEWS bangla সর্বশেষ সংবাদ ট্রাম্পের হুমকির পর ‘সম্মান’ দেখানোর আহবান ইউরোপীয় ইউনিয়নের

ট্রাম্পের হুমকির পর ‘সম্মান’ দেখানোর আহবান ইউরোপীয় ইউনিয়নের

3
0

Source : BBC NEWS

ইইউ ট্রেড কমিশনার মারোস সেফকভিস

ছবির উৎস, EPA

এক ঘন্টা আগে

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাণিজ্য প্রধান বলেছেন, ২৭ সদস্যের এই সংস্থাটি যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একটি বাণিজ্য চুক্তি করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ, তবে তার ভিত্তি হবে ‘সম্মান’, ‘হুমকি’ নয়।

ডোনাল্ড ট্রাম্প ইইউ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানিকৃত সব পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপের হুমকি দেয়ার পর সংস্থাটির দিক থেকে এমন বক্তব্য এলো।

সেই সাথে ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি হয়নি, এমন সব আইফোনে ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করতে পারেন। পরবর্তীতে তিনি বলেন, সব স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে এই শুল্ক প্রযোজ্য হবে।

“উভয় পক্ষের জন্য কার্যকর একটি চুক্তি করতে ইইউ পুরোপুরি অঙ্গীকারাবদ্ধ,” ইইউ ট্রেড কমিশনার মারোস সেফকভিস বলেছেন। এর আগে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রির ও বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিক এর সাথে সাক্ষাত করেন।

“ইইউ-ইউএস বাণিজ্য পরিচালিত হতে পারস্পারিক সম্মানের ভিত্তিতে, হুমকি নয়। আমরা আমাদের স্বার্থ রক্ষা প্রস্তুত আছি”।

এর আগে শুক্রবার ডোনাল্ড ট্রাম্প দুই পক্ষের মধ্যে চলমান আলোচনার ধীরগতিতে উষ্মা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, তার পরিকল্পনা হলো পহেলা জুন থেকেই শুল্ক কার্যকর করা।

সামাজিক মাধ্যম সোশ্যাল ট্রুথ এ ট্রাম্প লিখেছেন: ‘তাদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা কোনো দিক অগ্রসর হচ্ছে না”।

গত মাসে ট্রাম্প ইইউ-এর অধিকাংশ পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। তবে পরে আলোচনার জন্য সময় দিতে এর অর্ধেক আটই জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করে ১০ শতাংশ বহাল রাখেন।

বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন:
বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করে চলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

ছবির উৎস, Getty Images

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি হওয়া বা নির্মিত পণ্যের ওপর কোন শুল্ক থাকবে না।

“আমি কোন চুক্তির সন্ধান করছি না- আমরা চুক্তিটি তৈরি করেছি,” ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছেন। এরপর তিনি বলেন ইউরোপের কোন কোম্পানির যুক্তরাষ্ট্রে বড় বিনিয়োগ হলে তিনি এ নিয়ে বিলম্ব করতে রাজি আছেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের হিসেবে ইইউ বছরে ৬০০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য পাঠায় আর ৩৭০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করে।

ট্রাম্পের হুমকির প্রতিক্রিয়ায় ইউরোপের সরকারগুলো সতর্ক করে বলেছে উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ হলে তাতে উভয় পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

“আমাদের এই পথে যাওয়া উচিত হবে না। এগিয়ে যাওয়ার জন্য আলোচনাই সর্বোত্তম ও টেকসই পথ,” আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাইকেল মার্টিন বলেছেন।

“আমরা একই পথে আছি: উত্তেজনা কমানো, আবার আমরা জবাব দিতেও প্রস্তুত আছি,” বলেছেন ফরাসী পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

জার্মানির অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রী ক্যাথেরিনা ঘাইচা বলেছেন ‘যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে একটি সমাধানে পৌঁছানো নিশ্চিত করতে আমাদের সবকিছুই করতে হবে’।

ধারাবাহিক শুল্ক আরোপ বিশ্ব অর্থনীতিকে একটি নৈরাজ্যের মধ্যে ফেলেছে বলে অনেকে মনে করেন

ছবির উৎস, Reuters

ডাচ প্রধানমন্ত্রী ডিক স্কুফ সাংবাদিকদের বলেছে বাণিজ্য আলোচনায় ইইউ যে কৌশল নিয়েছে তাকে তিনি সমর্থন করছেন। “যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনায় আগেও আমরা শুল্ক কমতে ও বাড়তে দেখেছি”।

ট্রাম্পের অভিযোগ হলো ইউরোপ অসম বাণিজ্য সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে চায় কারণ তারা যুক্তরাষ্ট্র থেকে যে পরিমাণ পণ্য আমদানি করে তার চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বিক্রি করে।

তিনি বলেন এই বাণিজ্য ঘাটতি আমেরিকান কোম্পানিগুলোর জন্য অন্যায্য। বিশেষ করে তিনি গাড়ী ও কৃষিপণ্যের বিষয়ে থাকা নীতিগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

ট্রাম্প অ্যাপলকেও সতর্ক করে বলেছেন আইফোন আমেরিকায় তৈরি না হলে আরও ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক প্রয়োগ করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। পরে এটি অন্য স্মার্টফোনের জন্যও প্রযোজ্য হবে বলে জানান।

ওদিকে ট্রাম্পের হুমকির পর শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে শেয়ার বাজারের দরপতন হয়েছে।