Home LATEST NEWS bangla সর্বশেষ সংবাদ উপদেষ্টাদের পদত্যাগের পাল্টাপাল্টি দাবি কি সরকারকে অস্থিতিশীল করে তুলবে?

উপদেষ্টাদের পদত্যাগের পাল্টাপাল্টি দাবি কি সরকারকে অস্থিতিশীল করে তুলবে?

4
0

Source : BBC NEWS

(বাঁ থেকে) আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এবং অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলন গড়াতে গড়াতে শেষ পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টাদের পদত্যাগের দাবিতে গিয়ে ঠেকেছে। এই আন্দোলন ৪৮ ঘণ্টার জন্য স্থগিত ঘোষণা করা হলেও সরকারের দুইজন ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে আবার আন্দোলন কর্মসূচি দেয়া হতে পারে বলেও জানিয়েছেন ইশরাক হোসেন।

কয়েকদিন ধরেই স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে আসছেন বিএনপি’র নেতাকর্মীরা।

এই দু’জনই সরকার পতনের জুলাই আন্দোলনে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করেছিলেন।

এদিকে, বিএনপি’র এই দাবির পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারের তিনজন উপদেষ্টাকে ‘বিএনপির মুখপাত্র’ হিসেবে আখ্যায়িত করে পদত্যাগে বাধ্য করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন এনসিপি’র এক শীর্ষ নেতা, তবে তা “সংস্কার সুপারিশ বাস্তবায়ন না হলে”।

এই তিনজন হলেন— আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ।

উপদেষ্টা পরিষদে প্রধান উপদেষ্টাসহ মোট উপদেষ্টা আছেন ২৩ জন। এদের মাঝে দুই তরফ থেকেই যাদের পদত্যাগের দাবি উঠছে, তারা প্রত্যেকেই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছেন।

উভয় দল থেকেই বলা হচ্ছে যে তাদের এই দাবি না মানা অবধি তারা পিছু হটবে না।

এরইমধ্যে বৃহস্পতিবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানসহ বিতর্কিত উপদেষ্টাদের অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পরিস্থিতি যদি এরকম চলতে থাকে, তাহলে এটি সরকারকে আরও বেশি অস্থিতিশীল অবস্থার দিকে নিয়ে যেতে পারে।

সম্পর্কিত খবর:
বিএনপি ও এনসিপি'র লোগো

শপথ নিতে পারবেন ইশরাক, রায়ে নাখোশ এনসিপি

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের দাবি ছিল মূলত দু’টো। এক, তাকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানো। দুই, দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ।

তার প্রথম দাবিটি পূরণের পথে। কারণ আজ বৃহস্পতিবার ডিএসসিসি’র মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনের শপথ স্থগিত চেয়ে করা রিট খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। ফলে এবার ইশরাক হোসেনের মেয়র হিসেবে শপথ পড়তে কোনো বাধা রইলো না।

গত ১৪ই মে বিএনপি’র এই নেতাকে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছিলো। ওইদিন থেকেই কর্মসূচি পালন করে আসছেন ইশরাক সমর্থকরা।

কিন্তু হাইকোর্ট ইশরাক হোসেনের প্রথম দাবির পক্ষে রায় ঘোষণা করলেও দ্বিতীয় দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ‘রাস্তা না ছাড়ার’ ঘোষণা দেওয়া হয়।

রায় ঘোষণার পর আজ বেলা ১২টার দিকে ইশরাক হোসেন তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লেখেন, “আন্দোলনকারী ভাইদের বলবো এইসব মূলা দিয়ে গাধা বস করা যায়, আমাদের না।”

“দুই ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টাদের পদত্যাগের খবর না আসা পর্যন্ত লড়াই চলেছে, চলবে। রাস্তা তো ছাড়বেন না, আরও বিস্তৃত করতে হবে,” যোগ করেন তিনি।

তবে সরকারের দুইজন উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি বহাল থাকবে বলেও জানান তিনি।

এদিকে, হাইকোর্টের এই রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপি।

বৃহস্পতিবার ১২টার দিকে এনসিপি’র মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে তিনি লেখেন, “মব তৈরি করে যদি হাইকোর্টের রায় নেওয়া যায়, তাহলে এই হাইকোর্টের দরকার কি?”

এনসিপি’র সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বিবিসিকে বলেন, বিএনপি গত কিছুদিন ধরে “শক্তি প্রদর্শনের পথ বেছে নিয়ে জোর করে, হাইকোর্টের মোড় অবরোধ করে, নগর ভবন তালা দিয়ে, নাগরিক সেবা বন্ধ করে আজকের এই রায় ঘোষণা নিয়েছে।”

ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবিতে আন্দোলন

ছবির উৎস, Shafiqul Islam Sabuj

দুই দলই কেন উপদেষ্টাদের পদত্যাগ চাচ্ছে?

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন বুধবার সন্ধ্যার পর সমর্থকদের উদ্দেশে দেয়া বক্তৃতায় সরাসরি ব্যাখ্যা করেছেন যে তারা কেন দুই ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগ চাচ্ছেন।

তার ভাষ্য, “দুই উপদেষ্টার সাথে আমার পরিচয় নাই। শত্রুতা বা বৈরিতা নেই। এখানে কেবল গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটের অধিকারের জন্য আমাকে রাস্তায় নামতে হয়েছে।”

“ওনারা পদত্যাগ করে যে দলের সদস্য কিংবা যে দলের সদস্য হতে চান সেখানে গিয়ে সাংগঠনিক রাজনীতি করেন। সরকারের ওপর হস্তক্ষেপ চলবে না,” বলেছেন তিনি।

তিনি তখন আরও বলেন, “আমাদের পেছনে ফেরার সুযোগ নেই। যতদিন দাবি না মানা হবে, ততদিন আমরা এখান থেকে যাব না। আমি এখানে অবস্থান নেব।”

এর আগে, গতকাল দুপুরে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিতে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সামনে দুই ঘণ্টার বেশি বিক্ষোভ করে এনসিপি’র কিছু নেতাকর্মী।

তখন এনসিপি’র মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, “সংস্কার সুপারিশ বাস্তবায়ন না হলে উপদেষ্টাদের মধ্যে যারা ‘বিএনপির মুখপাত্র’ তাদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে।”

তিনি তখন আরও বলেন, “বাংলাদেশে এডুকেশন ডুবিয়ে দেওয়ার জন্য ওয়াহিদউদ্দিন ভাই (উপদেষ্টা) কাজ করছেন, দেশে ফাইন্যান্সিয়াল সেক্টরকে ডুবিয়ে দেওয়ার জন্য সালেহউদ্দিন ভাই (উপদেষ্টা) কাজ করছেন। আইন মন্ত্রণালয় ডুবিয়ে দেওয়ার জন্য আসিফ নজরুল কাজ করছেন।”

এখন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন আজ যেহেতু বলেছেন যে তারা উপদেষ্টাদের পদত্যাগের দাবি থেকে পিছু হটবে না, এক্ষেত্রে এনসিপি’র পদক্ষেপ এখন কী হবে–– জানতে চাইলে এনসিপি নেতা মি. আদীব বিবিসিকে বলেন, “বিএনপি যদি সরকারকে অগণতান্ত্রিক ও অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করে, তাহলে এনসিপিও দেশ ও জনগণের স্বার্থে তার রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।”

রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত মানে কি ওই তিনজন উপদেষ্টার পদত্যাগ? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “শুধু ওই তিনজন না, যারা কাজে ব্যর্থতার প্রমাণ দিয়েছেন, তাদের বিষয়েও দাবি থাকবে।”

তার মতে, যে যুক্তিতে আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগ চাইছে বিএনপি, তা অযৌক্তিক। পদত্যাগ চাইলে হলে উপদেষ্টাদের “কার্যকারিতা দেখে যাওয়া যেতে পারে।”

অর্থাৎ, যেসব মন্ত্রণালয় কাজে ব্যর্থতার প্রমাণ দিয়েছে, তাদের পদত্যাগ চাওয়া যেতে পারে।

চলতি বছরের ২৭ মার্চ একটি নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল ২০২০ সালের নির্বাচনের ফল বাতিল করে ইশরাক হোসেনকে নির্বাচিত ঘোষণা করে।

“ওই দুইজন এনসিপি নেতাদের সহকর্মী ছিল–– এই যুক্তিতে সরকারের অনেক উপদেষ্টা পড়বে, যারা বিএনপি’র সময়ে নিয়োগপ্রাপ্ত বা বিএনপি’র সুপারিশে এসেছে। বিএনপি’র লজিকে কেউ তো কোনো পন্থি ছাড়া না। এভাবে দেখলে তো পুরো উপদেষ্টা পরিষদই তো পুনর্গঠন করতে হয়,” বলেন তিনি।

“আমরা পন্থি হিসেবে কোনো উপদেষ্টার পদত্যাগ চাচ্ছি না। বিএনপি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের জায়গা থেকে অযৌক্তিক দাবিটা তুলছে। আমরা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের জায়গা থেকে বলি নাই। আমরা কার্যকারিতা-ব্যর্থতার কথা বিবেচনা করে বলেছি,” যোগ করেন তিনি।

এই তরুণ নেতা মনে করেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে “পুরনো ধারায় সরকারকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে বিএনপি” এবং জুলাইয়ের ঘোষণাপত্রকে বাধাগ্রস্ত করাও বিএনপি’র উদ্দেশ্য।

এদিকে, আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগ যে বিএনপি’র তরুণ নেতারা চাচ্ছেন, তা না। বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদও একই দাবি জানিয়েছেন।

ওই দুইজনের পদত্যাগের দাবি বিএনপি কেন জানাচ্ছে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সরকারের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার স্বার্থে ছাত্র প্রতিনিধি দুইজনকে সরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছি।”

“তাদের কথায়, কাজে ও কর্মকাণ্ডে সরকারের নিরপেক্ষতা-ইমেজ ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। তারা যে একটি নির্দিষ্ট দলের পক্ষে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কাজ করছে, তা ওপেন-সিক্রেট,” যোগ করেন তিনি।

সরকারের তিন উপদেষ্টাকে ‘বিএনপি’র মুখপাত্র’ আখ্যা দিয়ে এনসিপি যেসব অভিযোগ করেছে, সে ব্যাপারে মি. আহমেদ বলেন, “সেটা এনসিপি বলতে পারে। এটা তাদের দাবি।”

বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালও বিবিসিকে বলেন, “এনসিপির কিছু নেতাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে।”

“আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে তাদের (এনসিপি) সংঘাত, তাদের সাথে থাকা ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের দুর্নীতি, টেন্ডারবাজি, অনেক বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন” উল্লেখ করে তিনি বলেন যে এসব কারণেই সরকারের ওই দুই উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি উঠেছে।

তবে বিএনপি’র বিরুদ্ধে শক্তি প্রদর্শন করার যে অভিযোগ আনা হয়েছে, এ বিষয়ে তার মত, “বিএনপি কেন আক্রমণাত্মক হবে? আগ্রাসী হলে বিএনপি’র লস।”

বিএনপি কর্মীদের অবস্থান কর্মসূচি

এদিকে বৃহস্পতিবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলন থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের বিতর্কিত উপদেষ্টাদের সরানোর দাবি জানিয়েছে বিএনপি।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশারফ হোসেন বলেছেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার স্বার্থে বিতর্কিত কয়েকজন উপদেষ্টা যাদের বক্তব্যে এবং কর্মকাণ্ডে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে, এমন বিতর্কিত উপদেষ্টাদের সরিয়ে দেয়ার দাবি আমরা তুলেছিলাম।”

সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে তাদের অব্যাহতি দেওয়া প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার গতকালকের বক্তব্য আবারও নতুন বির্তকের জন্ম দিয়েছে। সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে তাকে অব্যাহতি প্রদান করতে হবে। ফ্যাসিবাদের দোসর কয়েকজন উপদেষ্টাকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি আমরা ইতিপূর্বে অনেক বার উত্থাপন করেছি।”

“যেহেতু, একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করাই এই সরকারের প্রধান কাজ, তাই মাথাভারী উপদেষ্টা পরিষদ না রেখে শুধুমাত্র রুটিন ওয়ার্ক (দৈনন্দিন কার্যক্রম) পরিচালনার জন্য একটি ছোট আকারের উপদেষ্টা পরিষদ রাখাই বাঞ্ছনীয়,” বলেন তিনি।

এই ছায়াযুদ্ধ কতদূর গড়াবে?

উপদেষ্টাদের পদত্যাগ নিয়ে যেসব দাবি-দাওয়া চলছে, এ বিষয়টিকে “শিশুসুলভ কর্মকাণ্ড” হিবেবে আখ্যা দেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. সাব্বির আহমেদ।

“এখানে এক ধরনের ইগোর খেলা চলছে। কোনো পক্ষই এখানে পরিপক্বতার পরিচয় দিচ্ছে না” উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারের পদত্যাগ এবং দৃশ্যমান কোনো অপরাধ না থাকলে সরকারের দুই-একজন উপদেষ্টার পদত্যাগ, দু’টো ভিন্ন বিষয়।

তবে বিশ্লেষকরা মনে করেন, মিয়ানমারে করিডর দেওয়া, চট্টগ্রাম বন্দরসহ নানা ইস্যু নিয়ে কোণঠাসা অবস্থানে রয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তাই তারা এখন এনসিপিকে কাজে লাগাচ্ছে।

বিএনপি ও এনসিপি’র মধ্যকার চলমান সংঘাত যদি “চরমে যায়, তারা (সরকার) যদি (বিএনপির সাথে) দৃশ্যমান যুদ্ধে নামে, তাহলে তারা (সরকার) হারবে এবং তাদের (সরকারের) পরিণতি হবে অসম্মানজনক,” মন্তব্য করেছেন সাব্বির আহমেদ।

“কারণ সমাজে এখনো এনসিপি’র গ্রহণযোগ্যতা নাই এবং তাদের অবস্থান খুবই দুর্বল। তাদের (সরকারের) মাথা ঠান্ডা করা উচিত। ইশরাক হোসেনসহ আরও নানা বিষয়ে রাজনীতি না করে তাদের উচিত সংস্কার ও নির্বাচনে মনোযোগ দেওয়া,” বলেন তিনি।

কিন্তু তা না করে যদি এই “ছায়াযুদ্ধ” চলমান থাকে, তাহলে “শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যাবে, আস্তে আস্তে একঘরে হয়ে যাবে,” সাব্বির আহমেদ যোগ করেন।

এ সময় তিনি এও বলেন যে “ইতিমধ্যে সরকার একঘরে হয়ে গেছে, কারণ দৃশ্যত আমরা দেখতে পাচ্ছি যে সামরিক বাহিনী তাদের (সরকারের) অযৌক্তিক কাজকর্মের কোনো ব্যাক-আপ দেবে না। তাই তারা আরও বিপদে। অতএব, দ্রুত নির্বাচন দিয়ে তাদের সরে যাওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. জোবাইদা নাসরীন মনে করেন, পদত্যাগের দাবি যে কেউ যেকোনো সময় করতে পারে। কিন্তু এই পদত্যাগ চাওয়ার পেছনের উদ্দেশ্য বোঝা জরুরি।

“এখানে বিএনপি’র উদ্দেশ্য ক্ষমতা প্রদর্শন করে সরকারকে চাপে রাখা। বিশেষ করে এনসিপিকে চাপে রাখা। এনসিপি’র উদ্দেশ্য হলো, পাল্টা শক্তি প্রদর্শন করা,” বলেন তিনি।